Recent Posts

ফ্রিল্যান্সিংয়ে নতুন কিন্তু সফলদের আড্ডা (অতিথিঃ মোঃ রায়হান জামিল )

অনলাইনে ইনকাম করা যায় এমন কথা এখনো অনেকেই বিশ্বাস করতে চান না প্রথমে।তাদের মতোই একজন মোঃ রায়হান জামিল । তার পছন্দের মার্কেটপ্লেস ওডেস্ক।  অন্যের  ওডেস্ক প্রোফাইল দিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি।  এখন  নিজে আরো তিনজন নিয়ে কাজ করছেন ,যার শুরুটা তেমন একটা সহজ ছিলো না। রায়হান স্বপ্ন দেখেন ১৫-২০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা এবং নিজেকে উদ্দ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ  করতে।

raihan_jamil

 ১।  ফ্রিল্যান্সিংয়ে কিভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন?   

জামিলঃ ২০১২ সালের শুরুতে ওডেস্কের নাম প্রথম শুনি।অনলাইনে ইনকাম করা যায় এমনটাও তখনি প্রথম শুনি।  বাট বিশ্বাস করতে পারিনি, তারপর এক ভাইয়ের ওডেস্ক প্রোফাইলে সপ্তাহে ৬০ ঘন্টা করে কাজ করি। প্রায় ৩০০ ঘন্টা কাজ করি। নিজেই ইন্টারনেট বিল দেই।উনি আমাকে ১ টাকাও দেননি । আমার জেদ চেপে গেল, তারপর রংপুর সফ্টের রাজীব ভাইয়ের লাইফস্টাইল দেখে অনেক ভাল লাগলো, ওনার সাথে কখনও কথা বলার সাহস হয়নি। ওনি চুয়েট থেকে ইন্জিনিয়ারিং শেষ করে ফ্রিল্যান্সিং করেন। বলতে পারেন ফাইনালি ওনার দেখেই উদ্বুদ্ধ হই।

২।  কবে থেকে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেছিলেন? সাধারণত কি কাজ করেন

জামিলঃ আমার শুরুটা ২০১২ সালে অন্যের ওডেস্ক প্রোফাইল দিয়ে । অনেকের মত আমার শুরুটা এতটা সহজ ছিলনা। অন্যের প্রোফাইলে কাজ করে যখন কোন টাকা পাইনি, তারপর নিজেই ওডেস্ক প্রোফাইল খুলে বিড করলাম কিন্তু কোন জবাব পাইনি। তারপর অনার্স ফাইনাল পরিক্ষা দিয়ে ঢাকায় গিয়ে কোন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষন নেয়ার সিদ্ধান্ত নেই ।কিন্তু বাবাকে কোন ভাবেই রাজী করাতে পারছিলাম না কেননা উনি গ্রামের মানুষ তাই অনলাইনে ইনকাম করা যায় বিশ্বাস করে না। তারপর আমার ছোট মামা মিজানের সহযোগিতায় বাবাকে রাজী করাতে পারি এবং ক্রিয়েটিভ আইটিতে (এস.ই.ও) কোর্স করি। এখন আমি এস.ই.ও, এ্যাডসেন্স ও এ্যাডমিন সাপোর্টের উপর ৩ জনকে সাথে নিয়ে কাজ করাই ও করি। সব মিলে আমি নিজে ৩২00+ ঘন্টা কাজ করেছি, আর বাকী ৩ জনের কাজ মিলে প্রায় ৭০০০ ঘন্টা ছুঁই ছুঁই কাজ করেছি।

৩। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শিখেছিলেন কিভাবে?  

জামিলঃ ক্রিয়েটিভ আইটি, ওয়েবার আইটির আর আমার হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের মাধ্যমে।

৪। কোন মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন? কেন?

জামিলঃআমার কাছে সবচাইতে ভাললাগে ও স্বাচ্ছন্দবোধ করি ওডেস্ক ডট কম মার্কেটপ্লেস। কেননা ওডেস্ক অনেক জনপ্রিয় , সহজ ও ওডেস্কের সাইটটা অনেক ফাস্ট। একটু কষ্ট করে ২/৩টা জব ভালভাবে শেষ করে ভাল ফিডব্যাক থাকলে কোন কিছুই উন্নতির পথে অন্তরায় থাকে না। টাকা উত্তোলনের মাধ্যমটাও অনেক সহজ, ওডেক্সের টাকা ডাচ বাংলা ব্যাংক/ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাকিং এর মাধ্যমে সহজেই উত্তোলন করা যায়। টাকাটা হাতেও পাওয়া যায় খুব দ্রুত , ৬-৮ ঘন্টার মধ্যে হাতে পাই।

৫। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে প্রথমবার কত পেমেন্ট পেয়েছিলেন? কাজ কি ছিল? সেই টাকা দিয়ে কি করেছিলেন?

জামিলঃ প্রথম পেমেন্ট ছিল বাংলাদেশী ৳১৭৬৭.৫৫ আর কাজ ছিলো বোটের(নৌকা) এ্যাড একটি সাইড থেকে ক্লাইন্টের সফ্টওয়ারে প্রবেশ করানো। টাকাটা অনেক কম ছিল, কিন্তু ওই কম টাকাই আমার শক্তি সাহস যুগিয়েছে অনেক। আমার প্রথম ইনকামের টাকা আমি আমার মায়ের হাতে তুলে দেই, মা ওই টাকা দিয়ে একটা মিলাদ দিয়েছিল।

৬। ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় করা পেমেন্ট কিভাবে উত্তোলন করেন?

জামিলঃআমি মানিবুকার্স(স্কিল) থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংক এর মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করি অথবা সরাসরি ডাচ বাংলা ব্যাংক/ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাকিং এর মাধ্যমেও টাকা উত্তোলন করি। তবে পেপালের অভাবে মার্কেটপ্লেসের বাইরে অনেক ক্লাইন্টের সাথে কাজ করতে পারি না।

৭। ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি

জামিলঃপূর্বেই বলেছি ৩ জনকে দিয়ে আমি কাজ করিয়ে নেই তারা প্রায় ৪০০০ ঘন্টা কাজ করেছে। আমি স্বপ্ন দেখি সেই দিনটির যেদিন ১৫/২০ জনের কর্মসংস্থান তৈরী করতে পারবো এবং সেই টিম নিয়ে কাজ করবো। একজন উদ্দ্যোক্তা হিসেবে অনেকেই চিনবে। আগামী মাসে হয়তোবা এ্যাডসেন্সের জন্য আরও ২ জনের কর্মসংস্থান তৈরী করতে পারবো।

৮। কাদের জন্য আপনি আজ এই পজিশনে আছেন? 

জামিলঃ ১. ক্রিয়েটিভ আইটি লিঃ এর এম.ডি মোঃ মনির ভাই ও ইকরাম ভাই
২. রংপুর সফ্টের রাজীব ভাই
আর স্পেশালি ইকরাম ভাই আমাকে অনেক সাহস যোগিয়েছেন।

৯। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে আপনি দিনে কত ঘন্টা ব্যয় করেন? কোন সময়টিতে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন?

জামিলঃপ্রতিদিন গড়ে ১০-১২ ঘন্টা কাজ করি। আমি সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ভোর ৫/৬/৭ পর্যন্ত কাজ করি। ৫/৬/৭ এটা মুলত ডিপেন্ড করে আমার এনার্জির ওপর। আর কাজ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি রাত ১১টা-৪টা কারন এই সময়টা কোলোহল মুক্ত, কেউ ফোনও করে না।

১০। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করতে আগ্রহীদের সফল হওয়ার পথে অন্তরায় কি বলে মনে করেন?

জামিলঃদ্রুত গতির ইন্টারনেট ও প্যাকেজ রেট! যেটা প্রথম অবস্থায় খুবি জরুরী।

১১। অনলাইনে আয় করতে হলে কি কি প্রস্তুতি নিতে হবে বলে মনে করেন?

জামিলঃ সর্ব প্রথমে বলবো ইংরেজি ভাল জানতে হবে, কোন একটি বিষয়ের উপরে ট্রেনিং নিয়ে দক্ষ হতে হবে, ধৈর্য  ধরে কম্পিউটারের সামনে বসে থাকার অভ্যাস গড়তে হবে।

১২। বাংলাদেশের যারা অনলাইনে আয় করতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য আপনার পরামর্শটি জানান।

জামিলঃ আমি সর্ব প্রথমে বলবো ইংরেজিতে দক্ষ হতে আর ইংরেজিতে দক্ষ হলে কোন কাজই কঠিন না। মনে সাহস রাখতে হবে, তারপর ভাল মানের কোন ট্রেনিং সেন্টারে যে কোন একটি বিষয়ের উপরে ট্রেনিং নিয়ে দক্ষ হতে হবে। সেটা করার জন্য দেখতে হবে কোন কাজটি করতে ভাললাগে । কোন কাজটি করতে মজা পায় ও বোরিং লাগে না এমন একটি বিষয় সিলেক্ট করতে হবে। সর্বোপরি ধৈর্য,ধৈর্য না থাকলে অনলাইনে আয় করতে আসার কোন মানেই হয়না। মনে রাখতে হবে ৫ দিনের ট্রেনিং নিয়ে আর যাই হোক দক্ষ কিংবা অনলাইনে আয় কোন টাই সম্ভব না।
Share on Google Plus

About Engr. Rokon Khan

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment