Recent Posts

ফ্রিল্যান্সিংয়ে নতুন কিন্তু সফলদের আড্ডা (অতিথিঃ জিনিয়া সওদাগর)

মেয়ে হয়েও পিছিয়ে নেই। মায়ের উৎসাহে এবং সহযোগিতাতে ফ্রিল্যান্সিং জগতে পথ চলা শুরু জিনিয়া সওদাগর (https://www.facebook.com/jinias.joti)  যাত্রাটা শুরু নিজের চেষ্টাতেই। নিজে নিজে অনলাইন থেকেই শিখেছেন সবকিছু। তারপরও পড়ালেখার ব্যস্ততার ফাকেই গত ১বছরে প্রায় ১৫০০ডলার অনলাইন থেকে আয় করেছেন। ওয়েবরিসার্চ, আর্টিকেল রাইটিং, এসইও বিষয়ক কাজগুলোই করছেন মার্কেটপ্লেসে। স্বপ্নটা শুধু নিজেকে নিয়ে নয়, স্বপ্ন দেখছেন প্রতিবন্ধী এবং দরিদ্রদেরকে প্রশিক্ষিত করে অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে সহযোগিতা করা। জেনেসিসব্লগসের পক্ষ থেকে তার এ পবিত্র স্বপ্ন সফলভাবে পূর্ণ করবেন, সেই প্রার্থনা করি। তার ওডেস্ক আইডিঃ https://www.odesk.com/o/profiles/users/_~0131716351f8075511/
Jinia

১।  ফ্রিল্যান্সিংয়ে কিভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন?

আমার মার কাছ থেকেই সর্বপ্রথম ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে পারি । মা-ই আমাকে অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ করেন ফ্রিল্যান্সিংয়ে । তাঁর উৎসাহ ছাড়া হয়ত আজ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম এ আমার অস্তিত্বও থাকত না । যখন যে পত্রিকা অথবা ম্যাগাজিনে সফল ফ্রিল্যান্সারদের সাক্ষাৎকার বা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত যা কিছু মার নজরে পরত সেটাই আমাকে পড়াতেন । এসব পড়ে আমি নিজেও বেশ অনুপ্রাণিত হতাম। বিশেষ করে মারজান আহমেদের একটি ইন্টারভিউএর তিনটি শব্দ- “JUST START IT” আমাকে অনেকাংশে উৎসাহিত করেছিল । যেদিন তাঁর এই তিনটি শব্দ পড়ি সেদিনই oDesk এ প্রোফাইল তৈরি করি এবং জোরদার ভাবে কাজ শুরু করি । ১৫ দিন পর আল্লাহর বিশেষ রহমতে কাজ পেয়ে যাই । বাবা জানার পর তিনিও আমাকে অনেক উৎসাহিত করেন এবং সব ধরনের সাহায্য করেন । রাত জেগে কাজ করতাম; খাওয়া, ঘুম কোন কিছুর ই ঠিক ছিল না কাজের নেশায় । বাবা-মা ই খাইয়ে দিতেন ।

 ২।  কবে থেকে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে ছিলেন?  সাধারণত কি কাজ করেন?

১৮ মার্চ, ২০১৩ থেকে আমার ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু হয় । সাধারণত রিসার্চ, আর্টিকেল রাইটিং, এস.ই.ও এর কাজ ই করি । পাশাপাশি এডমিন সাপোর্ট ও দিয়ে থাকি ।

 ৩। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শিখেছিলেন কিভাবে?

আসলে আমি কারও কাছ থেকে কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করি নি । ইন্টারনেট, কম্পিউটার এর ব্যবহার জানায় এবং ইংলিশ লিটারেচার এর স্টুডেন্ট হওয়ার সুবাদে নিজ দক্ষতায় ইন্টারনেট রিসার্চ এবং আর্টিকেল রাইটিং এর কাজ শুরু করি । আমার প্রথমদিকের ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে ও অনেক কিছু শিখেছি । পরবর্তীতে আমার ফুফার কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে শিখি ডিরেক্টরি সাবমিশান । তারপর এস.ই.ও এর কোর্স করি ক্রিয়েটিভ আইটিতে ।

 ৪। কোন মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন? কেন?

oDesk এ প্রথম কাজ শুরু করি এবং এই মার্কেটপ্লেসেকাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করি । কারণ, oDesk ই আমার কাছে তুলনামূলক বেশি user friendly মনে হয় ।

 ৫। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে প্রথমবার কত পেমেন্ট পেয়েছিলেন? কাজ কি ছিল? সেই টাকা দিয়ে কি করেছিলেন?

ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে প্রথমবার ৭৬ডলার পেমেন্ট পেয়েছিলাম। কাজ ছিল রিসার্চ আর আর্টিকেল রাইটিং এর । সেই টাকা দিয়ে আব্বু-আম্মুর জন্য গিফট কিনেছিলাম ।

 ৬। ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় করা পেমেন্ট কিভাবে উত্তোলন করেন?

ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় করা পেমেন্ট সরাসরি ব্যাংক এর মাধ্যমে উত্তোলন করি।

 ৭। ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?

আমাদের সমাজে শারীরিক প্রতিবন্ধী, দরিদ্র ছেলেমেয়েরা অনেকাংশে অবহেলিত । তাদের মেধা থাকা সত্ত্বেও অনেক কারনেই তারা তা কাজে লাগাতে পারে না । আমি এসব ছেলেমেয়েদের কাজের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের ফ্রিল্যান্সিংয়ের আওতায় আনতে চাই ।

 ৮। এখন পযন্ত ফ্রিল্যান্সিং থেকে আনুমানিক কি পরিমাণ আয় করেছেন?

একজন স্টুডেন্ট হওয়ায় সব সময় ইচ্ছা করলেই কাজ করতে পারি না । তা সত্ত্বেও ফ্রিল্যান্সিংয়ের এই দেড় বছরে আনুমানিক ১৫০০ ডলার আয় করেছি ।

 ৯। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে আপনি দিনে কত ঘন্টা ব্যয় করেন? কোন সময়টিতে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন?

লেখাপড়ার পাশাপাশি দিনে প্রায় ৮-৯ ঘণ্টা ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে ব্যয় করি । রাতের বেলা কাজ করতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করি । এই সময় লোড শেডিং কম হয় আর পরিবেশ ও শান্ত থাকে ।

 ১০। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করতে আগ্রহীদের সফল হওয়ার পথে অন্তরায় কি বলে মনে করেন?

ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করতে আগ্রহীদের সফল হওয়ার পথে অন্তরায় হচ্ছে ইংরেজিতে দক্ষতার অভাব । আর আমাদের দেশের লোড শেডিং, ব্যয়বহুল কম্পিউটার, ইন্টারনেট কানেকশান তো আছেই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য । এছাড়াও আমাদের দেশের অনেক মানুষ এমনকি শিক্ষিত সমাজের অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে এখনও অবগত নয় । যার ফলে তাদের ছেলেমেয়েদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পারিবারিক সহযোগিতার অভাবে  তারা ফ্রিল্যান্সিংয়ে পিছিয়ে আছে ।

 ১১। অনলাইনে আয় করতে হলে কি কি প্রস্তুতি নিতে হবে বলে মনে করেন?

অনেকেই অনলাইনে আয় করাকে অনেক কঠিন কাজ মনে করেন । আমাদের দেশে যেমন যেকোনো কাজ করতে গেলে সে কাজে দক্ষতার প্রয়োজন হয়, ঠিক তেমনি অনলাইনে আয় করতেও প্রথমে কাজে দক্ষ হতে হবে । ঠিক 3 idiots মুভির আমির খানের কথামত- “আগে কাজে দক্ষতা অর্জন কর, সফলতা আপনা থেকেই তোমায় খুঁজে নেবে” । অনলাইনে আয় করতে হলে কাজে দক্ষতার পাশাপাশি ইংরেজিতেও দক্ষতা অর্জন এবং ইন্টারনেটের ব্যবহারও জানা জরুরী ।

 ১২। বাংলাদেশের যারা অনলাইনে আয় করতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য আপনার পরামর্শটি জানান।

বাংলাদেশের যারা অনলাইনে আয় করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য আমার পরামর্শ হচ্ছে কাজে দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি অবশ্যই ইংরেজি ভালোভাবে আয়ত্ত করুন এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার শিখুন । আর অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে । দেশীয় চাকুরীতে যেমন অ্যাপ্লাই করলেই কাজ পাওয়া যায় না, আপনার চাকুরী পেতে ১ দিন নাকি ১ বছর লাগবে তা যেমন আপনি নিশ্চিতভাবে বলতে পারবেন না, অনলাইনে কাজের ক্ষেত্রেও ঠিক একই রকম । So, keep trying hard. Good luck all of you!
Share on Google Plus

About Engr. Rokon Khan

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment